ব্লগার কে ফলো ফেসবুকে করুন!

রবিবার, ২৭ মার্চ, ২০১৬

রক্তচোষা পিপড়া

রহমান সাহেব একজন সাধারান মানুষ।শুধু মাত্র একটা ছেলে তার...।
তার স্ত্রী সম্প্রতি কিছু বছর আগে ক্যান্সার এ আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এর পরে আর তিনি আর বিয়ে করেননি।
-
ছেলেকে পড়ালেখা করানোর জন্য বিদেশে পাঠিয়েছেন...।
-
তার ছেলের পড়ালেখা শেষ হয়ে গেলে সে ওখানেই একটা চাকরী পায়...।
খুব ভালই টাকা পেত সেখানে..।
-
রহমান সাহেব তার গ্রামের জমিজমা বিক্রি করে শহরে এসে জায়গা কিনে তাতে বাড়ি বানানোর সিদ্বান্ত নেয়।...
জমি বিক্রি করা টাকা ও তার ছেলের পাঠানো টাকা দিয়ে সে বাড়িটা বানাতে চায়...
-
তাই সে প্রথমেই শহরে এসে একটা ভাল জমি ক্রয় করে....।
-
বাড়ি বানানোর জন্য ইট,বালু,রড,সিমেন্ট সব আনা শেষ....।
যেদিন কাজে হাত লাগাতে যাবে ঠিক সেদিনেই তার কাছে একটা লোক আসে..।সাথে কিছু ছেলে ও আসে মোট সাত জন..।
সেখানকার এলাকাবাসীরা তাকে একনামে চিনে।... বাবু -- সবাই বাবু ভাই ডাকে।
খুবই প্রভাবশালী ও ক্ষমতাশালী মানুষ...
-
এসেই রহমান সাহেবের সাথে কথোপকথন --- ↓
-চাচা এদিকে আসেন..।
-জ্বী,বলো বাবা কি?
-বাড়িটা কি আপনিই তৈরী করছেন?
-হ্যা,আমিই। কেনো?
-আমরা এসেছি আপনার কাছে কমিশন চাইতে।
-কিসের কমিশন??
-অই বুইড়া কথা বুজস না?বাড়ি বানাবি আমার এলাকায় আর আমারে কিছুই দিবিনা?
-বাবা আমার কাছে ততো টাকা না যে তোমাদের দিব।
গ্রামের জায়গা বিক্রি করে শহরে এসেছি বাড়ি বানাতে।
(বাবু পকেট থেকে একটা পিস্তল বের করে রহমান সাহেবের সামনে রাখল)
-এটা কি দেখছত?টাকা না দিলে সব কয়টা ক্যাপসুল তোর শরিরে ভইরা দিমু।...এখন তুই সিদ্বান্ত নে, টাকা দিবি নাকি মরবি??
আজকে গেলাম ৩ দিন সময় দিচ্ছি আর এর মধ্যে ১০ লক্ষ টাকা আমার হাতে দিবি আর নয়ত বুঝতেই পারসস...।
-
(রহমান সাহেব চিন্তায় পরে গেলেন।
কি করবেন কিছু ভাবতে না পেতে ছেলের কাছে ফোন দেন---
-হ্যাল, বাবা কেমন আছেন?
-আছি ভালই।...
-বাড়ির কাজ কেমন চলছে?
-বাড়ির কাজ বন্ধ খুব চিন্তায় আছি.
-কেন কী হয়েছে?
-এখানকার খুব ক্ষমতাশালী লোক এসে ১০ লক্ষ টাকা চাদা চেয়ে গেছে।..কি করব কিছু বুজতেছি না।...
-কি বলো বাবা??
তুমি পুলিশের কাছে যাওনা কেন?
-ভাবছি যাব দেখি কি হয়..আচ্ছা বাবা তুই এখন ফোনটা রাখ।
-আচ্ছা বাবা রাখলাম ভাল থেক।
-
রাত ৯:০০ টা বাজে.....
রহমান সাহেব পুলিশ স্টেশনে গিয়ে একটা রিপোর্ট করে আসে।...
সে কি জানে যে এতে কোন লাভ নেই।....
পুলিশ স্টেশন চলেই যে বাবু ভাইয়ের নামে...।
-
সকাল বেলা বাবু আবার তার কাছে আসে---
-আহা চাচা কথা বুঝতে পারেন নাই?আপনি কালকে পুলিশের কাছে রিপোর্ট করছেন।
ভাবছেন টাকা না দিয়েই বেচে যাবেন?
-আমি যে পুলিশের কাছে গেছি তা তুমি জানলে কিভাবে?
-আগেই বলছি এই এলাকা আমার।আমি যা বলব তাই হবে।
কই টাকা কই? যলদি দে নয়ত তোর আজকেই শেষ দিন।
- দেখ বাবা আমি এতো টাকা কিভাবে দিব?
-আমি এতো কিছু জানিনা টাকা দে।
(মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে)
-আমি ৩ গুনব হয় টাকা দিবি না হয় মরবে।
(গুনা শেষ সে টাকা দিতে রাজি হলনা।
বন্দুকের টিগার চেপে দিল বাবু,হত্যা করল রহমান সাহেবকে।...)
-
তার নিথর দেহ খানা পরে রইল তার ক্রয়কৃত জমিটাতে...
রক্তে ভিজে গেছে সেখান কার মাটি--।
রক্ত জমে একটা আস্তরণ পরে আছে আর এর চারদিকে অনেক গুলো পিঁপড়া এসে রক্ত খাচ্ছে ---।)
-
খবর পেয়ে তার ছেলে দেশে ছুটে আসল।..
কি আর করার এসে বাবার নিথর দেহখানাকে কবরে শায়িত করে আসল।...
-
সে টাকাটা দিয়ে দিলে বেচে থাকত কিন্তু তার বাড়ি বানানো হতনা।...
তিনি মরে যাবার পরে ও তা আর হলনা।...
টাকাটা দিয়ে দিলে কি আর হতো??
বাড়িটা বানানো হতোনা কিন্তু সে তো বেচে থাকতো,।
আর অই বাবুর ঈ বা কি লাভটা হল??
এমনি একটা মানুষকে মেরে ফেলল।
-
তার ছেলে তো এর বিচার ও পাবেনা।..
কারন,পুলিশ তো বাবুরই লোক।...
-
-
এটা কয়েক লাইনের গল্প হলেও এমন ঘটনা তো ঘটেই চলছে।...
যা আপনারাও জানেন।....
ধরেন আপনি এমন ঘটনার শিকার হয়েছেন, কি করবেন আপনি/?
টাকা দিবেন নাকি দিবেন না...।
-
আমি শিওর ১০০ জন মানুষের মাঝে ৯০ জন টাকা দিতে রাজি হবে।
বাকি রইল ১০ জন এরা টাকা দিবেনা কারন তার সামর্থ্য নেই।
ফলসরূপ তাকেও এই রহমান সাহেবের মত মরতে হবে..
-
কি করবেন আপনি,?
কিছু করার নেই এতে আপনার ক্ষতি হবে।...
-
বিঃদ্রঃএটা একটা কাল্পনিকতা মেশানো গল্প তবে এর একটা অংশও মিথ্যা নয়।
আর এটা আপনারাও জানেন।
-
সকলে ভাল থাকবেন --।
-
গল্পঃ*** রক্তচোশা পিঁপড়া ***
লেখাঃ Anik Hasan

কোন মন্তব্য নেই: