ব্লগার কে ফলো ফেসবুকে করুন!

মঙ্গলবার, ১২ মে, ২০১৫

""""দাম""""


সকাল ৬:০০ বাজে।

ফোন বাজার শব্দে ঘুম ভাংল।

-হ্যাল,আসসালামু-আলাইকুম,কে বলছেন?
-কেন,এখন চিনতে পার না আমি কে?
আমি তোমার পেত্নি।
-ওহ তুমি।আমি চিনতে পারিনি?
-তুমি চিনবে না কেন আমার নাম্বার কি সেভড করা নাই?
-ঘুমের চোখে ফোন ধরলাম তো তাই নামটাও দেখি নাই।
-আচ্ছা আমি কি তোমাকে এমনি অন্ধ বলি।
যে কোন কিছু সামনেই থাকে কিন্তু তুমি তা দেখই না।
-আচ্ছা আমি অন্ধ ঠিক আছে।
এবার রাখো।
কলেজের জন্য প্রস্তুত হতে হবে।
-আচ্ছা রাখি।

(প্রিয় মানুষের মুখ থেকে যত খারাপ কিছু শুনেন না কেন তাতে মন খারাপ হবে না।
অন্ধ বলছে, বলুক সে যা বলে খুশি হয়।)

এবার নিজেই ফোন দিলাম .....

১বার নয় ২ বার ও নয় ৩ বার ফোন দিলাম।
ফোনটা রিসিভ করল ...

-এই মেয়ে কোথায় ছিলে?ফোন রিসিভ করতে দেরি কেন?
-এইতো মাকে সাহায্য করছিলাম।
তোমার কলেজ কি শেষ?
-হুম্ম,মাএ বাসায় ফিরলাম।
-আচ্ছা, সামনে তো পহেলা বৈশাখ ইলিশ মাছ কিনে ফেলছ?
-না মা কিছুক্ষণ আগে ২,০০০ টাকা দিয়ে বলল"দুইটা বড় ইলিশ মাছ আনবি"।
-আচ্ছা তাহলে যাও বাজারে।রাখি,
Bay...
-আচ্ছা রাখ।

বাজারে যাবার পর দেখি বাজারে অনেক মানুষ।
আর সকলের নজর ছিল ইলিশ মাছের দোকান গুলুতে।

একটি মাছের দোকানে গিয়ে দুইটা বড় ইলিশের দাম জানতে চাইলাম।

-এই যে এই ২ টা মাছের দাম কত?
-জি একদাম ৩,০০০টাকা দেন।

আমিতো সম্পূর্ণ টাস্কিত।
দুইটা মাছের দাম ৩,০০০ টাকা।
তখন আর কি করব?মাছ না নিয়েই বাড়ি ফিরলাম।

বাড়ি ফেরার পথে দেখি ২ টা ছেলে,দেখতে কাল,শরির শুকনো আর রাস্তার পাশে বসে ভিক্ষা করছে।

আমি তাদের ডেকে বললাম ...
-তোমারা ভিক্ষা করছ কে?
- সের(স্যার)আমরা খুবই গরিব।বাবা নেই।
খাওয়ার জন্য খাবার নেই।
আর ভিক্ষা করলে কিছু পেটে জোটে তাই ভিক্ষা করি।
-আচ্ছা তোমরা কোথায় থাক?
-সের(স্যার)কমলাপুর এর বস্তিতে।

একটা ৫০০ টাকার নোট দিয়ে বললাম
"যাও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে কিছু কিনে খেয়"

ছেলে গুলো বিনয়ে পা ধরে বলল
"আপনার মত মানুষ থাকলে আমরা কখনই ক্ষুধার্ত থাকব না"আপনি মহাণ"
আর এর পর চলে গেল।

আচ্ছা আপনাদের কি মনে হয়,আমি কি তাদের মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছি ????

(.....এমন হাজার হাজার শিশু আছে যারা পথেঘাটে ভিক্ষা করে।
যাদের বাড়ি নেই,খাবার নেই,নেই কোন শিক্ষার পরিবেশ।
শুধু পেটের দায় মেটাতে তাদের এসব করতে হয়।

আমরাও পারি তাদের সেবা করতে,তাদের মুখে হাসি ফোটাতে।

পহেলা বৈশাখ এ ইলিশ মাছ অনেক খেয়েছি।
কিন্তু একবার চিন্তা করে দেখেন---

আমরা মজা করে পান্তা ইলিশ খাব কিন্তু অপর দিকে এই গরিব ছেলেরা ও মানুষগুলো কি করবে?
হয়ত বসে কোন রাস্তার পাশে বসে করবে ভিক্ষা না হয় কিছু না খেয়েই দিন কাটাবে।

একদিন পান্তা ইলিশ না খেলে যে মারা যাব তেমন তো কিছুই নয়।

সে টাকা দিয়ে কিছু মুখে তুলে দিলাম খাবার।দিলাম কিছু নতুন জামা।

আর একেই বলে মানুষ্যত্ব বোধ।....)

আবার ফোন দিলাম ...

-হ্যাল তুমি কি করছ?
-কিছু না।
-আচ্ছা পহেলা বৈশাখ এ কিকি কিনেছ?
-কিছুই না।
-কেন?
-ভাবলাম পাশের কিছু গরিব শিশু দের নতুন জামা-কাপড় কিনে দেই।
সারা বছর ঈ তো জামা কাপড় অনেক কিনলাম।কিন্তু পহেলা বৈশাখ এ নতুন জামা পরতে হবে তা তো নয়।।
তাই কিছুই কিনি নাই।
-ও ভাল।তোমার কথা শুনে খুশি হলাম।
আচ্ছা bay.
-bay.

কি আমরা কি পারি না কিছু মুখে হাসি ফোটাতে ??
হ্যা ,অবশ্যই পারব।
কিন্তু যার জন্য দরকার প্রয়োজনীয়উদ্যোগ।

আজ আমাদের কাছে পহেলা বৈশাখ ফেশন এ পরিনত হয়েছে।
যার ফলে সকলে পান্তা ইলিশ আর নতুন জামা পরে ঘুরে বেরায়।
কিন্তু কেউ নিন্ম বা গরিবদের ভাবি না।
যা আমাদের কাম্য নয়।

লেখাঃ
Anik (অজশ্র কাব্যধারা
∞∞∞∞∞∞∞∞∞

কোন মন্তব্য নেই: