ব্লগার কে ফলো ফেসবুকে করুন!

রবিবার, ২৭ মার্চ, ২০১৬

কাশফুলের লুকোচুরি

খুব-এই তোমার হাতটা দাওনা।

-কেনো?

-দাওনা।...

-নাও নাও।নিয়ে যাও।....

..

(হিমেল তার একটা হাত নিজের হাতের সাথে আঁকড়ে ধরে হাটতে থাকে।আর মালিহা তার মাথাটা নেতিয়ে দেয় হিমেলের কাধে।....

মনে হয় মেয়েটা হিমেলের কাধে মাথা রেখে সুখ খুঁজছে।

-

সকলে দোয়া করবেন যাতে হিমেল সারাজীবন মালিহার হাতটা আঁকড়ে ধরে রাখে।....

আর মালিহা এভাবেই যাতে সুখে থাকতে পারে।.....

-

সুখে থাকুক ভালবাসার মানুষ গুলো।উজ্জীবিত থাকুক তাদের জীবন।তাদের ভালবাসা থাকুক আজীবন প্রাণবন্ত, ফুটন্ত ও শাশ্বত।....

-

জয় হোক ভালবাসার---  

-

লেখাঃ Anik Hasan ( মঙ্গলগ্রহের এলিয়েন )সুন্দর একটা মেয়ে।অভিমানী বালিকা,যদি অভিমানের উপরে এওয়ার্ড দেয়া হয় তাহলে তাকেই দেয়া অত্যাবশ্যক।
মেয়েটির নাম মালিহা। নামটা হয়ত বেশ পুরোনো মনে হতে পারে। বাবা মায়ের রাজকন্যা ছিল তবে এখন শুধু তার বাবার জন্য,কারন মেয়েটার মা নেই।
-
তার বাবা কখনো তাকে কোন কিছুর কষ্টে রাখেনি।যা দরকার চাহিবামাত্র পেয়েছে। বাবার একমাত্র কন্যা বলে কথা।.... 
-
মালিহার বিয়ের বয়স প্রায় হয়ে গেছে।একটা বাবার কাছে এ যেনো বিশাল বড় একটা চিন্তা।তার বাবার কিছুদিন যাবত শরীরটাও ভাল যাচ্ছেনা।তাই তিনি মেয়ের বিয়েটা তাড়াতাড়ি সেড়ে ফেলতে চান।
-
> মালিহা,ও মালিহা মা এদিকে একটু শোন- (তার বাবা)
[বাবার ডাকে মেয়েটা ছুটে আসে]
>জ্বী,বাবা বল?
>আমার পাশে বস, কিছু জরুরী কথা আছে।
>হুম্ম বাবা বসলাম, বলো?
>তুই কি কাউকে পছন্দ করিস?
>হুম্ম।
>ভালবাসিস?
>হ্যা, বাবা তোমাকে এত্তগুলা ভালবাসি। এত্তগুলো   ।
>আরে কোন ছেলেকে পছন্দ করিস?
>বাবা হঠাৎ এমন কথা বলছো কেনো?কি হয়েছে তোমার?
> তুই তো দেখিস ই যে আমার শরীর তেমন একটা ভাল যাচ্ছেনা। আমার কিছু হওয়ার আগে আমি তর জীবন টাকে সাজিয়ে দিয়ে যেতে চাই।...
তোর বিয়েটা দিয়ে যেতে চাই।
জানিস যে আমি তোর পছন্দের জিনিশ গুলো নিজের পছন্দ মনে করি।
তাই জিজ্ঞাস করলাম কাউকে ভালবাসিস, পছন্দ করিস নাকি?
>বাবা তুমি আমাকে তাড়িয়ে দিতে চাও? 
>নারে পাগলি কোথাকার, বিয়েতো একদিন না একদিন করবিই,তাইনা?
>আমি কি বলছি এখন ই করব? আর আমি গেলে তোমার দেখাশোনা করবে কে?
>তুই এসব চিন্তা করিস না।আমি সব দেখে নিব।তুই খালি বিয়েতে রাজি হয়ে যা।দেখ মা এইটাই আমার শেষ ইচ্ছা।.... ?
>বাবা তুমি ঘুমাও তো,পরে কথা বলি এ বিষয়ে।
-
বাবার শেষ ইচ্ছা বলে কথা।মালিহা খুব চিন্তায় পরে গেলো।...
ঘুমাতে যায় অথচ ঘুম আসেনা।রুমে হাটাহাটি করেই যাচ্ছে,কি করবে বুঝতেই পারছে না।
অতঃপর মালিহা ছাদে গিয়ে দোলনায় বসে দোল খেতে শুরু করে।এতেও তার ভাল লাগছে না।....
তার মা মারা যাওয়ার পরে তার বাবা তাকে একটা তারা দেখিয়ে বলছিল তার মা নাকি সেই তারাটা,আর সে নাকি তাদের দেখে মিটমিট করে হাসেন।
মেয়েটা এখন অনেক বড় তবুও তার বিশ্বাস যে অই তারাটাই তার মা।
যার ফলে তার মন খারাপ হলে,বা সমস্যা হলে সে ছাদে এসে আকাশের সবচেয়ে বড় তাড়াটাকে দেখে কান্না করে।এতে নাকি তার মন পরিষ্কার হয় ও,তার সকল চিন্তা ও নাকি দূর হয়।........
তাই মেয়েটা আজকেও ছাদে এসে কাঁদছে।....
দুই চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরছে,কিছুক্ষণ পরে সে স্বাভাবিক হওয়ার পরে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয়, আর নিতেই হবে কারন তার বাবার শেষ ইচ্ছা ভা স্বপ্ন।....
-
পরের দিন সকালে সে তার বাবাকে হ্যা সূচক উত্তর দেয়।.....
-
অনেক ছেলে দেখতে আসে তাকে,কিন্তু ছেলে পছন্দ হয়না।
অবশেষ এ একটা ছেলেকে তাদের কাছে খুব ভাল লাগে।...হিমেল ছেলেটার নাম।... 
খুব ভাল পরিবারের ছেলে।একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। ভাল বেতনে কাজ করে,ভাল বাসায় থাকে।
*
এসব তো আর মাইনে রাখেনা। তার বাবা চায় তার মেয়ে যদি কুঁড়েঘরে থেকে সুখে থাকে তাহলে সেখানেই বিয়ে দিবেন।........
-
খুব তাড়াতাড়ি বিয়েটা ঠিক হয়ে যায়।দেখা যায়, দেখা যায় মালিহা ও হিমেল দুজনেই একে অপরকে পছন্দ করা শুরু করে।....
*
-আসসালামু আলাইকুম বাবা,ভাল আছেন?(হিমেল)
-ওয়ালাইকুম সালাম।জ্বী, আলহামদুলিল্লাহ ভাল আছি।তুমি কেমন আছো?
-জ্বী,ভাল।বাবা আমি এসেছিলাম মালিহাকে নিয়ে যেতে।বেশি দূরে নয়,ওর সাথে কিছু সময় ব্যয় করতে চাই।
-সমস্যা কিসের? যাও নিয়ে যাও,ওতো তোমার স্ত্রী হতে চলছে।
(আর এদিকে মেয়েটা তো তাকে দেখে লজ্জায় গলে যাচ্ছে, ঠিক মোমের মত)
-
অতঃপর হিমেল ও মালিহা ঘুড়তে বের হলো,রেস্টুরেন্ট এ গিয়ে বসে কফি খেতে খেতে কথা বলছে----
-কোথায় যাবেন বলেন?
-বাসায় যাব।
-আচ্ছা আপনি কি লজ্জা পাচ্ছেন?দেখুন লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই।আমি আপনাকে ভালবেসে ফেলছি।এই কথাটা বলার জন্যই তোমাকে বাইরে নিয়ে আসলাম।
(মেয়েটা এখন আরো বেশি লজ্জা পাচ্ছে)
কি হলো এখন ও লজ্জা পাচ্ছেন? আচ্ছা আপনি কি আমাকে পছন্দ করে বিয়ে করছেন (হিমেল)?
-না।
-মানে?
-ভালবেসে বিয়ে করছি।!!কিছু কথা যা আপনাকে বলা হয়নি আজ বলে দিলাম হ্যা, ভালবাসি আপনাকে ভালবাসি -- (মালিহা)
[হিমেল তার দিকে চেয়ে মুচকি হাসছে।]
-আমিও আপনাকে ভালবাসি ও তোমাকে। আর জীবন সঙ্গী হিসেবে পেতে চাই।
-আমিও তোমাকে আমার বর ও জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে চাই।....
(দুজন দুজনার হয়ে গেল,ভাবনা গুলো মিশে গেলো ভালবাসার রঙ্গিন সুতোয়)
-আমাকে নিয়ে যাবা একটা জায়গায়? যেখানে কেউ নেই শুধু আমি আর তুমি আর কেউ নাহ।....
-কোথায় যাবা বলো?
- এই আমার না কাশফুল খুব পছন্দ আমি সেখানেই যাব। আর সেখানে হারিয়ে যাব,কী নিয়ে যাবে?
-হুম্ম, চলো।
*
অতঃপর একটা কাশবনে গেলো তারা।....
কেউ নেই শুধু তারা দুজনেই।....
মনে হয় নতুন কোন পৃথিবীকে আলিঙ্গন করেছে। ....
।।।।।।।

কোন মন্তব্য নেই: