***** সাইকো সিরিজ *****
★
↓
রাত প্রায় ২:০০ বাজে।...
-
পাঞ্জাবির পকেটে একটা কাটা আজ্ঞুল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। লাল রক্তে মোড়ানো আজ্ঞুল।...
সদ্য কাটা একটা আজ্ঞুল,যা আমার দ্বারাই কাটা হইছে।....
-
পকেট টা সানান্য রক্তে ভিজে লাল হয়ে আছে।...
আর ডান পকেটে রাখা ধারাল ছুড়ি, অনেক ধারাল।ছুড়িটাতেও রক্ত লেগে আছে।
.
.
সিগারেটটা হাতে জ্বলছে।কিছুক্ষণ পর পর টানছি সিগারেট টা।
.
রাস্তার পাশের সোডিয়াম লাইট গুলোকে দেখে মনে হচ্ছে লাইট গুলো আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
.
সাদা পাঞ্জাবী সোডিয়াম লাইটের আলোতে হলদেটে দেখা যাচ্ছে।
নিজের শরির এর রং ও হলুদ দেখা যাচ্ছে।
.
কালকে আমার আরেকটা শিকার করতে হবে।
আমার প্রয়োজন কাটা আজ্ঞুল, মেয়েদের কাটা আজ্ঞুল।
.
সবে মাত্র ১৮ টা আজ্ঞুল হইছে আরো ৩ টা বাকি।আজ্ঞুল গুলো খুব যত্নে রেখে দিয়েছি।....
-
পরের দিন সকাল ৮:০০ টা।..
ঘুম ভাজ্ঞার পরে প্রস্তুত হয়ে নিলাম আমার আরেকটা শিকারের জন্য ।
আমার ধাড়াল ছুড়িটা পকেটে রাখলাম।
.
আজকে শিকারের খোঁজে গেলাম একটা প্রাইভেট কলেজে।
.
কলেজের বাইরের কফি শপে বসে আছি।
চোখে সানগ্লাস লাগানো,কালো রং এর গ্লাস বাইরে হতে চোখ দেখা যায়না।।...
কিছুক্ষণ বসে থাকার পরে। ....
একটা গাড়ি এসে থামল, গাড়ি থেকে নিচে নামলো একটা রমনী,।
যা খুঁজতে ছিলাম তা পেয়ে গেছি।...
হাতের ৩ টা আজ্ঞুলে আংটি জড়ানো।
বেশ দামি আংটি মনে হয়।
.
.
মেয়েটা এসে ঠিক আমার পাশের টেবিলটায় বসলো।
প্রায় এভাবে আধা ঘন্টা গেল, এর মাঝে একটা জিনিশ খেয়াল করলাম মেয়েটা আমার দিকে চেয়ে মুচকি হাসছে।
একবার না তাও বহুবার।..
.
মেয়েটা ভাবছে আমি অন্য দিকে তাকিয়ে আছি--
-এই যে ম্যাম শুনছেন?
-জ্বি,আমাকে বলছেন?
-হ্যা,ম্যাম আপনাকেই।
-হুম্ম বলেন কি হইছে?
-আপনি আমার দিকে বারবার তাকাচ্ছেন যে,কোন সমস্যা?
-আমার চোখ আছে আমি তাকাতেই পারি আপনার কী.?
-আমার কিছুনা,একটা কথা বলব?
-হুম্ম,বলুন?
-প্রেম করবেন?আমার সাথে?
-উম্ম!! হ্যা করব।
(মাছ জালে আটকাইছে। মেয়েটাও কেন জানি মেনে নিল নিজেই জানিনা।...
যাক আমার কি ভাবার? আমার কাজ মেয়েটার হাতের আজ্ঞুল কাটতে হবে)
-নাম কী আপনার?
-জ্বি,অন্তরা।আপনার?
-অনিক আমার নাম।
(তার সাথে ভালভাবে পরিচিত হয়ে নিলাম।
এর পরে শুরু করলাম প্রেম।)
নাম্বার থেকে শুরু করে বাসার ঠিকানা সহ সব নিয়েনিলাম।
-
-হ্যাল কেমন আছো।
-হুম্ম ভাল তুমি? (অন্তরা)
-হুম্ম ভাল আছি।
-তোমাকে খুব মিস করছি।
-আমিও।
(যাই হোক মেয়েটাকে আমার হাতে রাখতে লাগবেই)
-এই তোমার সাথে দেখা করব ।
-আচ্ছা আমি আসছি ঠিকানা দাও।
****
অতঃপর তাকে ঠিকানা দিয়ে ফোন রাখলাম।
আজকের প্লান তাকে খুশি করা। --
↓
মেয়েটা আমার দেয়া ঠিকানায় চলে আসল।
-এই নাও এসে পড়লাম।
-হুম্ম আমি খুব খুশি হইছি।..
-অহ!!
-হুম্ম,এই চলো কিছু খাই ক্ষুধা লাগছে।
-হুম্ম,চলো।
★খাওয়া দাওয়া শেষ --
-এই একটু শপিং এ যাব প্লিজ আমার সাথে চলনা।
- গেলাম তারসাথে সাথ (কিছু করার নেই)
(শপিং এর বিলটাও আমাকেই দিতে হইছিল)
-আমি আজ অনেক খুশি তুমি আমাকে আজকে এত্তগুলা শপিং করে দিলা।
(খুশি তো হবাই। বিনা টাকায় এত্তগুলা শপিং যে পেলেন।
যাক মেয়ে খুশি তো আমি খুশি)
-
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে আসছে তাই সেখান অন্তরা কে বিদায় জানিয়ে আমার বাসায় চলে আসলাম।
-
-
এখন আর আমাকে ফোন দিতে হয়না মেয়েটাই ফোন দেয়।
এভাবে চলতে থাকল আমার প্রেম।
প্রায় ৩ মাস প্রেম করলাম তবে আমার টা ছিল শুধু অভিনয়।
-
আজ ২২ সে অক্টোবর।
অন্তরার জন্ম দিন।
-শুভ জন্মদিন জানু।
-হুম,ধন্যবাদ।
-এই তোমার গিফট নিবেনা?
-হুম্ম নিব।
-আমার দেয়া ঠিকানায় আস তোমার জন্য সারপ্রাইজ গিফট আছে।
-
মেয়েটা চলে আসল আমার দেয়া ঠিকানায়।আর আমি বসে আছি মেয়েটার আজ্ঞুলের আশায়।---
সোডিয়াম লাইটের নিচে মেয়েটা দাঁড়িয়ে আছে।
সাথেই একটা ছোট রাস্তা রয়েছে।
**আমি ফোন দিয়ে বললাম তাকে রাস্তার ভিতর দিয়ে চলে আসতে।
-
সে রাস্তা দিয়ে ভিতরে এসে বসে রইল একটা টেবিলে।
জায়গাটা ছিল একটা বাগানের মতো
-
পিছন থেকে এসে মেয়েটার মুখে রুমাল চেপে অজ্ঞান করে ফেললাম।
কারন রুমালে ছিল অজ্ঞান করার ওষুধ।
যেটা মানুষকে ১ ঘন্টার জন্য পুরোপুরি মেরে ফেলতে সক্ষম
-
ডান হাতের আজ্ঞুল গুলো দেখছি এখন কোনটা কাটব চিন্তায় পরে গেলাম।
কিছু না ভেবে হাতের তিনটা আজ্ঞুল ই কেটে ফেললাম।
আজ্ঞুলের সাথে আংটি মোড়ানো।
-
ধেত্ত আংটি দিয়া কি হইব? ছুড়ে ফালায় দিলাম।
আজ্ঞুল তিনটা দিয়ে বন্যার মত রক্ত বইছে।
আজ্ঞুল গুলো পকেটে রেখে দিলাম।
পকেট ভিজে রক্তে লাল হয়ে আছে।
সিগারেট টানছি আর রাস্তায় হাটছি।আমার হাত গুলায় গন্ধ পাচ্ছি রক্তের গন্ধ।
-
হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল।রাস্তায় দাড়িয়ে ভিজছি আর নিজেকে পবিত্র করে নিচ্ছি।
-
আমি মেয়েটার আজ্ঞুল ৩ টাকে অন্য আজ্ঞুল গুলার সাথে রেখে দিলাম।
মোট ২১ টা আজ্ঞুল।আমার রুমের ছোট ফ্রিজের মধ্যে আজ্ঞুল গুলো রেখে ছিলাম যাতে নষ্ট না হয়
-
আমি আজ্ঞুল কাটি কারন আমি মেয়েদের আজ্ঞুল গুলাকে ঘৃণা করি।
৫ বছর আগে জুলাই মাসের ২১ তারিখ
আমি তখন কলেজে পড়ি।
-
তখন একটা মেয়েকে আমার খুব ভাল লাগে।
ভালবেসে ফেলি তাকে।
একদিন তাকে প্রপোজ করলাম।
কিন্তু সে আমাকে সেখানেই অনেক অপমান করেছিল।
আমি তাকে প্রপোজ করার সময় একটা গোল্ডেন রিং দিয়েছিলাম সে সেটা ড্রেনে ফেলে দিয়েছিল।....
-
তখন থেকে আংটি পরহিত মেয়ে গুলাকে দেখতে পারিনা।
২১ তারিখ ছিল সেদিন তাই আমি প্রতিজ্ঞা করি ২১ টা আজ্ঞুল কাটব এবং সে গুলো মেয়েটাকে গিফট করব।
কিন্তু আফসোস মেয়েটা এখন দেশে নেই।
কি আর করার?
আজ্ঞুল গুলোকে মিশরের বাদশাহ দের মতো মমি করে রাখলাম।
ডিয়ার কাটা আজ্ঞুল গুলো ভাল থেকো।--
আর অপেক্ষায় থাকো তোমার মালিকের জন্য।
-
লিখাঃ Anik Hasan ( মজ্ঞলগ্রহের এলিয়েন )
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন